সর্দি ও তার চিকিৎসা গাছ-গাছরা ও কুরআন হাদীসের আলোকে
সর্দি কেনো হয় এবং তার চিকিৎসা
সর্দির কারণঃ
শীতল পানি, শীত, তুষার, রোদন, নাক দিয়ে ধূলি ও ধূম প্রবেশ, দিনে বেশি ঘুমানো, রাত্রিজাগরণ, অজির্ণের কারণে মাথার কফ ঘনীভূত হয়ে সর্দি রোগ হয়। ( বেহেস্তী জেওর খ.৯ পৃ.৭৪)
ডাক্টারদের ভাষায়ঃ
সর্দি বা ঠান্ডা শ্বাসনালির একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা প্রধানত নাক আক্রমণ করে থাকে। এতে গলা সাইনাস ও কণ্ঠনালি আক্রান্ত হতে পারে।
উপসর্গঃ কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, মাথাব্যথা ও জ্বর হয়।
রোগী সাধারণত ৭ দিন থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। কোন কোন উপসর্গ তিন সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। যাদের অন্য স্বাস্থ সমস্যা আছে, তাদের কখনো কখনো নিউমনিয়া দেখা দিতে পারে।
সর্দি বা ঠান্ডা নামকরণের কারণঃ ঐতিহ্যগতভাবে ধারণা করা হয়, ঠান্ডায় যেমন বৃষ্টি কিংবা শীতে অনাবৃত হলে সর্দি লাগে, এখান থেকেই এর নাম হয়েছে ঠান্ডা বা সর্দি। ( যুগান্তর ১৮ জুন ২০২২ ডা. একে এম আমিনুল হক)
সর্দির ঘরোয়া চিকিৎসা
১ নাম্বারঃ- আদার রসে একটু মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি ভালো হয়। এভাবে কয়েক দিন করলে সর্দি দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।(চিরঞ্জীব বনৌষধি খ.১ পৃ.৫৭)
২ নাম্বারঃ- বেল পাতার রস এক চামচ খেলে কাঁচা সর্দি ও তার সাথে জ¦র বা জ¦রভাব দূর হবে ইনশাআল্লাহ। ( তবে বয়াসের তারতম্মের কারণে এক চামচের চেয়ে কম বেশি করা যেতে পারে) (চিরঞ্জীব বনৌষধি খ.১ পৃ.১০৯)
৩ নাম্বারঃ- কাঁচা সর্দি, হাঁচি, নাক দিয়ে তরল পানি বের হলে, তেতুলের কাঁচা পাতা ৩ বা ৪ গ্রাম সিদ্ধ করে তা ঠান্ডা করে খেলে সর্দি দূর হবে ইনশাআল্লাহ। (চিরঞ্জীব বনৌষধি খ.১ পৃ.১৯৪)
৪ নাম্বারঃ- বুকে সর্দি বসে খুব কষ্ট হলে এক্ষেত্রে তেতুলের পাতা সিদ্ধ করে তা ঠান্ডা করে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। তবে এর সাথে মাষকলাই ও পান সরিষার তেলে ভেজে ঐ তেল বুকে মালিশ করলে আরো বেশি ফায়দা পাওয়া যায়। (চিরঞ্জীব বনৌষধি খ.১ পৃ.১৯৬)
দুআ দ্বারা সর্দির চিকিৎসা
১ নাম্বারঃ- আমি আল্লাহ তা’য়ালার কাছে আশাবাদি নিম্নের এখলাসের সাথে বেশি বেশি পাঠ করলে সর্দির যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ كَانَ أَبُو لَيْلَى يَسْمُرُ مَعَ عَلِيٍّ فَكَانَ يَلْبَسُ ثِيَابَ الصَّيْفِ فِي الشِّتَاءِ وَثِيَابَ الشِّتَاءِ فِي الصَّيْفِ فَقُلْنَا لَوْ سَأَلْتَهُ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ إِلَيَّ وَأَنَا أَرْمَدُ الْعَيْنِ يَوْمَ خَيْبَرَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَرْمَدُ الْعَيْنِ فَتَفَلَ فِي عَيْنِي ثُمَّ قَالَ اللَّهُمَّ أَذْهِبْ عَنْهُ الْحَرَّ وَالْبَرْدَ قَالَ فَمَا وَجَدْتُ حَرًّا وَلَا بَرْدًا بَعْدَ يَوْمِئِذٍ
অনুবাদ
আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আবু লাইলা আলী (রা.) এর সাথে নৈশ আলাপ করছিলেন, আর আলী (রা.) গরম কালের পোষাক শীত কালে আর শীত কালের পোষাক গরম কালে পরিধান করতেন। ফলে আমরা যদি আপনি তাকে জিজ্ঞাসা করতেন? আলী (রা.) বলেন, খয়বারের দিনে রাসুল (সা.) আমাকে ডেকে পাঠালেন, তখন আমি চোখের রোগে ভুগছিলাম। আমি বল্লাম হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমি চোখের রোগে ভুগছি, রাসুল (সা.) আমার চোখে থুথু দিলেন, তারপর বললেন, اللَّهُمَّ أَذْهِبْ عَنْهُ الْحَرَّ وَالْبَرْدَ আলী (রা.) বলেন এর পর থেকে আমি আর ঠান্ডা-গরম অনুভব করি না।(ইবনে মাজা পৃ. ১৩০)
বাংলা উ”চারণ
আল্লাহুম্মা আজহিব আনহুল র্হারা ওয়াল বারদা।
১ নাম্বারঃ- নিম্দুনেরআটি প্রতিদিন ফজরের নামাযের পরে পাঠ করলে সর্দির যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
عن أبي هريرة ، رضي الله عنه قال عن رسول الله صلى الله عليه وسلم ، أنه قال إذا كان يوم شديد البرد ألقى الله تعالى سمعه وبصره إلى أهل السماء والأرض ، فإذا قال العبد : لا إله إلا الله ، ما أشد برد هذا اليوم ، اللهم أجرني من زمهرير جهنم ، قال الله عز وجل لجهنم : إن عبدا من عبادي استجارني من زمهريرك ، وإني أشهدك أني قد أجرته . فقالوا : وما زمهرير (১) جهنم ؟ قال : بيت يلقى فيه الكافر فيتميز من شدة بردها بعضه من بعض
অনুবাদ
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যেদিন খুব শীতল দিন হয়, তখন আল্লাহ তা’য়ালা আসমান ও যমিন বাসির প্রতি মনোনিবেশ করেন, যখন কোন বান্দা বলে لا إله إلا الله (লা ইলাহা ইলল্লøাল্লাহ) এই দিনের শীত কতো কঠিন, (হে আল্লাহ) اللهم أجرني من زمهرير جهنم (আল্লাহুম্মা আজিরনী মিন জামহারীরি জাহান্নাম) তখন আল্লাহ তা’য়ালা জাহান্নামকে বলেন, আমার বান্দাদের থেকে এক বান্দা তোমার গর্জন থেকে আমার নিকট আশ্রয় চেয়েছে, আর আমি সাক্ষ্য দি”িছ যে আমি তাকে আশ্রয় দিবো। তারা বলল, জামহারীর কি? তিনি বললেন, এমন একটি ঘর যেখানে একজন কাফেরকে নিক্ষেপ করা হবে তার তিব্র শীতের কারণে তার এক অঙ্গ আরেক অঙ্গ থেকে পৃথক হয়ে যাবে। (আল আসমাউ ওয়াস সিফাত লিল বায়হাকী খ.১ পৃ.৪১১)
পরিপূর্ণ দুআঃ لا إله إلا الله اللهم أجرني من زمهرير جهنم
বাংলা উ”চারণ
লা ইলাহা ইলল্লাহু আল্লাহুম্মা আজিরনী মিন জামহারীরি জাহান্নাম।
সর্দি দূর করার জন্য আকাবিরদের আমল
১ নাম্বারঃ- তিন বার সূরা ফাতেহা পাঠ করে রোগীকে ফুঁক দিলে সর্দি কুমে যায়।
২ নাম্বারঃ- খানা সামনে রেখে নি¤েœর আয়াত ১১ বার পাঠ করে ঐ খানায় ফুঁক দিয়ে খাবে খাবে এতে সর্দি ও কাশি উভয়টা কুমে যাবে ইনশাআল্লাহ। (আমলিয়াতে কাশমীরী পৃ.৮২)
৩ নাম্বারঃ- সব সময় সর্দি লেগে থাকলে শরিষার তেল ও পানি সামনে রেখে ৩৩ আয়াত তথা মুঞ্জিল পাঠ করে ঐ শরিষার তেল ও পানিতে ফুঁক দিয়ে ঐ তেল গোসলের পূর্বে সমস্ত শরীরে মালিশ করে ঐ পড়া পানি গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে গোসল করবে এভাবে কয়েক দিন করলে ইনশাআল্লাহ সমস্যা দূর হবে। (বেহেস্তী জেওর খ.৯ পৃ.৭৪)
Comments (0)